ব্লুমবার্গ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন এবং আসন্ন নির্বাচন জার্মান ব্যবসায়িক মনোভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির উদ্যোক্তারা উদ্বিগ্ন ও অস্থির, ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। সামনে কী অপেক্ষা করছে? কী করা উচিত? এখনই ঘুরে দাঁড়ানোর সময়!

এই বছর, জার্মান কোম্পানিগুলো বিশেষভাবে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। এই পরিস্থিতির কারণে অনেক বিশেষজ্ঞ সন্দেহ প্রকাশ করছেন যে জার্মানি শিগগিরই উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে কি না।

সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, আইএফও বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স জানুয়ারিতে ৮৪.২ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা ডিসেম্বরে ৮৪.৪ পয়েন্টে ছিল। Ifo ইনস্টিটিউটের সভাপতি ক্লেমেন্স ফুয়েস্ট এই পতনের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফেরারয় সৃষ্ট অনিশ্চয়তা এবং জার্মানির আসন্ন নির্বাচনকে দায়ী করেছেন। এর ফলে, বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ফুয়েস্ট সতর্ক করেছেন যে এই বছরের জার্মান অর্থনীতির কঠিন পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে।

ব্লুমবার্গের বিশ্লেষকরা অনুমান করছেন যে পরপর দ্বিতীয় বছরের মতো জার্মানির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সংকোচনের সম্মুখীন হয়েছে। মূলত উৎপাদন খাতের দুর্বলতা, বহির্বিশ্বে চাহিদা হ্রাস, এবং ঋণের উচ্চ সুদের হার এই সংকটের পেছনের কারণ হিসেবে কাজ করেছে। পাশাপাশি, শ্রমশক্তির বার্ধক্যজনিত সংকট এবং চীনের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।

অর্থনীতিবিদ মার্টিন আদেমার স্বল্পমেয়াদে জার্মান অর্থনীতির সম্ভাবনা নিয়ে হতাশাজনক পূর্বাভাস দিয়েছেন। বিশেষ করে উৎপাদন খাতে ব্যবসায়িক প্রত্যাশার আরও অবনতি ঘটেছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে ধীর প্রবৃদ্ধির ঝুঁকি এখন জার্মান অর্থনীতির প্রধান সমস্যা হয়ে উঠেছে। এই বিশেষজ্ঞ আরও সতর্ক করেছেন যে বাণিজ্য সংঘাত বৃদ্ধি পেলে জার্মানির রপ্তানি-নির্ভর শিল্পগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

বুন্ডেসব্যাংক এবং অন্যান্য বিশ্লেষকরা ২০২৪ সালে জার্মানির জন্য নিয়ন্ত্রিত প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছেন। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এখনও জার্মান অর্থনীতির জন্য একটি বড় ঝুঁকি হিসেবে রয়ে গেছে।

এর আগে, জার্মান সরকার ২০২৫ সালের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১.১% থেকে কমিয়ে ০.৩%-এ নামিয়ে এনেছে। অথচ গত শরৎকালে, দেশটির সরকার আরও আশাবাদী ছিল এবং ২০২৬ সালের মধ্যে ১.৬% জিডিপি বৃদ্ধির প্রত্যাশা করেছিল।