বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মিশ্র মুভমেন্ট দেখা গেছে। দিনের বেলা মূল্য কয়েকবার দিক পরিবর্তন করেছে, তবে এই রিভার্সালগুলো কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রভাবে হয়নি। মার্কেট এখনো অস্থির অবস্থায় রয়েছে, এবং হোয়াইট হাউজ থেকে টানা সংবাদ প্রবাহ আসছে। আমাদের দৃষ্টিতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশিরভাগ তথ্যই গুরুত্ব দেওয়ার মতো নয়। তবে ট্রেডাররা তা মনে করছেন না। শুরুতে, পাওয়েলকে বরখাস্ত করার সম্ভাব্য সংবাদের কারণে ডলারের দরপতন হয়েছিল, পরে তার পদে বহাল থাকার খবরের পর ডলার শক্তিশালী হয়েছে। ইউরোজোনের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচকের দুর্বল ফলাফল উপেক্ষা করা হয়েছে, এবং একই অবস্থা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচকের দুর্বল ফলাফলের ক্ষেত্রেও। সামগ্রিকভাবে, মার্কেটে এখনো বিশৃঙ্খল এবং বিভ্রান্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে, যার সাথে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের খুব কম সম্পর্ক রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, দিনের বেলা এই পেয়ারের মূল্য কতবার দিক পরিবর্তন করেছে এবং কীভাবে টেকনিক্যাল লেভেলগুলোতে পৌঁছেছিল। বলা যায়, প্রায় সব টেকনিক্যাল লেভেলই উপেক্ষিত হয়েছে — তবে এটি আশ্চর্যের কিছু নয়, কারণ টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস তখনই কাজ করে যখন মার্কেটের ট্রেডাররা সেগুলোর প্রতি মনোযোগ দেয়। বর্তমানে, মার্কেটের ট্রেডাররা পুরোপুরি ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার গুরুত্বপূর্ণ এবং পরস্পরবিরোধী সিদ্ধান্তের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে। গতকাল এবং তার আগের দিন ডলারের দর সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে আজ এটি আবারও তীব্র দরপতনের শিকার হতে পারে।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দিয়ে নতুন সপ্তাহ শুরু হয়েছে, তবে মঙ্গলবার ট্রাম্প এই পেয়ারের মূল্যের কারেকশন ঘটিয়েছেন। সামগ্রিকভাবে মার্কেটে ট্রেডাররা এখনো ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্র সংক্রান্ত সবকিছুর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধরে রেখেছে। তবে ট্রাম্প যদি তার শুরু করা বাণিজ্য সংঘাত নিরসনের দিকে এগিয়ে যান, তাহলে ডলারের মূল্য দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
বৃহস্পতিবার এই পেয়ারের মূল্য আবারও যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ মূল্যের মুভমেন্ট সম্পূর্ণরূপে ট্রাম্পের মন্তব্য এবং সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। আজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কি বলবেন, তা কেউই অনুমান করতে পারে না, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রতি কোনো মনোযোগ দিচ্ছে না।
5 মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য উপযুক্ত লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বাড়ি বিক্রি এবং টেকসই পণ্যের অর্ডার সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তবে মার্কেটের ট্রেডাররা এই প্রতিবেদনগুলো দ্বারা প্রভাবিত হবে কিনা বা এগুলোর প্রতি কোনো মনোযোগ দেবে কিনা সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।