মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের তুলনামূলকভাবে উল্লেখযোগ্য দরপতন দেখা গেছে। প্রায় সারা দিনজুড়ে ইউরোর দরপতন হয়েছে, এবং রাতারাতি এই মুভমেন্ট আরও তীব্র হয়েছে। নতুন করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের পরে এই দরপতন আরও ত্বরান্বিত হয়। এবার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জানান যে তিনি ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার চিন্তা থেকে সরে এসেছেন, যদিও তিনি এখনো পাওয়েলের খুব ধীরগতির পদক্ষেপের জন্য দোষারোপ করেন। মনে রাখবেন, ট্রাম্প চাচ্ছেন ফেডের প্রধান সুদের হার আরও কমিয়ে দিক, অথচ পাওয়েল তার সিদ্ধান্তগুলো মুদ্রানীতির প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য সূচকের উপর ভিত্তি করে নেন। ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন যে তিনি চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক 145%-এ রাখার কোনো ইচ্ছা পোষণ করেন না। এই দুইটি সংবাদ শিরোনাম ডলারের তীব্র দর বৃদ্ধি উস্কে দিয়েছে। তবে উনি ডোনাল্ড ট্রাম্প—তিনি যদি আগামীকাল ঘোষণা দেন যে পাওয়েলকে বরখাস্ত করা উচিত, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অতীতে রাতারাতি এতটা শক্তিশালী মুভমেন্ট বিরল ছিল, কিন্তু এখন সেগুলো রুটিনে পরিণত হচ্ছে, কারণ ট্রাম্প প্রায়ই রাতের বেলায় (আমাদের টাইম জোন অনুযায়ী) সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে, তবে সেগুলো আবারও প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল দেয়নি। বর্তমানে মার্কেটে ধারাবাহিকতার চেয়ে বিশৃঙ্খলাই বেশি। এই পেয়ারের মূল্য সারা দিনজুড়ে কমেছে, কিন্তু এই মূল্য হ্রাস খুব ধীরগতির ছিল। টেকনিক্যাল লেভেলগুলো খুব দুর্বলভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। মার্কেটে মুভমেন্টের তীব্রতা বারবার পরিবর্তিত হচ্ছে, কারণ ট্রাম্প নিয়মিতভাবে তার বিপরীতমুখী মন্তব্যের মাধ্যমে মার্কেটে "ঝড়" সৃষ্টি করছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও, এটাই বর্তমান বাস্তবতা।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। নতুন সপ্তাহের শুরুতেই আবারও একটি শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে, কিন্তু মঙ্গলবার ট্রাম্পের মন্তব্যের ফলে একটি কারেকশন হয়েছে। সামগ্রিকভাবে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্র সংক্রান্ত সবকিছুর প্রতি অত্যন্ত নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে, তবে যদি ট্রাম্প তার শুরু করা বাণিজ্য সংঘাত নিরসনের দিকে এগিয়ে যান, তাহলে ডলারের চাহিদা দ্রুতই ফিরে আসতে পারে।
বুধবার যেকোনো দিকে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কারণ বর্তমানে মার্কেটের মুভমেন্ট এখনো মূলত ট্রাম্পের মন্তব্য এবং সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। আজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কি বলবেন, তা কেউই জানে না। দিনের প্রথমার্ধে ডলারের কিছুটা শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
5 মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1395–1.1413, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689।
বুধবার জার্মানি, ইউরোজোন এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরিষেবা ও উৎপাদন খাতে ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল কারেন্সি মার্কেটে আরও বাড়তি অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় ট্রাম্পের নতুন মন্তব্য প্রকাশিত হতে পারে, যা মার্কেটে আরেকটি "ঝড়" সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।