সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে এগুলো মার্কেটে খুব একটা প্রভাব বিস্তার করছে না। এই প্রতিবেদনগুলো স্বল্পমেয়াদি বা স্থানীয় পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে প্রভাব ফেলতে পারে, তবে এটি সবাই জানে যে মার্কিন অর্থনীতি এতটা খারাপ অবস্থায় নেই যে ডলার শত শত বা হাজার হাজার পিপস দরপতনের শিকার হবে।
আজ ইউরোজোনে ZEW ইকোনমিক সেনটিমেন্ট সূচক এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যুক্তরাজ্যে বেকারত্বের হার, জবলেস ক্লেইমস বা বেকার ভাতার আবেদন ও বেতন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যুক্তরাজ্যের এই পরিসংখ্যানগুলো ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের আর্থিক নীতিগত অবস্থানে প্রভাব ফেলতে পারে—তবে এখন কে-ই বা সে অবস্থানের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে? ডলার এখনও দরপতনের শিকার হচ্ছে, এমনকি ফেডারেল রিজার্ভ তুলনামূলকভাবে কঠোর অবস্থানে থাকলেও।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ বাদে অন্য কোনো ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নিয়ে আলোচনা করার কোনো মানে হয় না। অনির্দিষ্টকাল ধরে ডলারের দরপতন চলমান থাকতে পারে। আমরা ট্রেডারদের প্রতি পরামর্শ দেব, বিশ্বের বৃহত্তম দেশ ও অর্থনৈতিক জোটগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের শুল্ক সংক্রান্ত বক্তব্যের দিকে মনোযোগ দিতে। ট্রাম্প বলেছেন, "অন্যায্যতা দূর করার" লক্ষ্যে তার নেওয়া পদক্ষেপের বিপরীতে যেকোনো প্রতিক্রিয়া নতুন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কের মাধ্যমে কঠোরভাবে মোকাবেলা করা হবে।
একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চীন বাদে সব দেশের জন্য ৯০ দিন শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা করেছেন, যার মধ্যে সমানভাবে ১০% আমদানি শুল্ক কার্যকর থাকবে। ট্রাম্পের মতে, এই সময়টি বাণিজ্য আলোচনা চালানোর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে আমরা আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। চীনের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, এবং চীন থেকে আপসমূলক উদ্যোগ আসবে বলে মনে করার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। মার্কেটের ট্রেডারদের দৃষ্টিতে বর্তমানে চীন এবং ইউরোজোনের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার:
সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। মার্কেটে এখনও আতঙ্ক এবং বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাই বর্তমানে মূল্যের মুভমেন্টে কোনো যৌক্তিকতা দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত খবর আসছে, এবং কখন এই ধরনের খবর আসবে বা ট্রাম্প পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নেবেন, তা অনুমান করা একেবারেই অসম্ভব।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।