বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার পুনরায় EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয় এবং এটির মূল্য 300 পিপসের বেশি বৃদ্ধি পায়। শুক্রবারের শুরুর দিকেও এই পেয়ারের মূল্যের নিরবচ্ছিন্ন ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম অব্যাহত থাকে। মার্কিন ডলারের নতুন দরপতনের পেছনের কারণগুলো চিহ্নিত করা খুব একটা কঠিন নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে চীনের ওপর 125% শুল্ক আরোপ করেন এবং পরে সেটি বাড়িয়ে 145% করেন। এই ঘটনাই মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, অন্যান্য সব দেশের জন্য শুল্ক 10% এ নামিয়ে আনার ঘটনাটি খুব বেশি গুরুত্ব পায়নি। মার্কেটের ট্রেডাররা বুঝে গেছে যে দ্বন্দ্বটি মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে—সার্বিয়ার মতো দেশের সঙ্গে নয়। ফলে অধিকাংশ ট্রেডার এখন চীন (এবং ইইউ)-সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলোর দিকেই মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করছে। একই দিনে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদনটির ফলাফলও ডলারের জন্য নেতিবাচক ছিল, তবে সেটি মার্কেটে খুব একটা প্রভাব বিস্তার করেচনি। কারণ সেই প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই ডলার ইতোমধ্যে দরপতনের পথে ছিল এবং তারপরে সেই ধারা অব্যাহত ছিল।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার অনেকগুলো ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়, কারণ মূল্য প্রায় 300 পিপস একদিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করে। আপনি চাইলে যেকোনো জায়গা থেকে বাই ট্রেড ওপেন করতে পারতেন। একইভাবে, যেকোনো জায়গায় বাই ট্রেড ক্লোজ করলেও লাভ নিশ্চিত ছিল।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
1 ঘণ্টার চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। এই প্রবণতা কতদিন চলবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না, কারণ কেউ জানে না ট্রাম্প ভবিষ্যতে আর কতবার শুল্ক আরোপ করবেন। বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হতে পারে, বিশেষ করে যখন অনেক দেশই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, যেকোনো পাল্টা পদক্ষেপের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে শুল্ক আরোপ করবে। ট্রাম্পের বাড়তি শুল্ক স্থগিত করার সত্ত্বেও ডলার শক্তিশালী হতে পারেনি, কারণ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য সংঘাতের দিকেই ট্রেডাররা দৃষ্টিপাত করছে।
শুক্রবার মার্কেটে সম্ভবত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করবে। আমরা আজ এই পেয়ারের মূল্যের পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করবো না, কারণ প্রায় প্রতি দুই ঘণ্টা পরপরই বাণিজ্য সংঘাত সংক্রান্ত নতুন খবর আসছে। বর্তমানে বিশ্ব বাজারে যা ঘটছে, তা ভাষায় প্রকাশ করাও কঠিন।
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা যেতে পারে: 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1367, 1.1395, 1.1418, 1.1449।
শুক্রবার ইউরোজোনে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডে বক্তব্য রাখবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে কিছু স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। আমাদের বিশ্বাস, ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া মূলত বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত ঘটনাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, তবে লাগার্ডের বক্তব্যও মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।