বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
গত ২৪ ঘণ্টায় GBP/USD পেয়ারের মূল্য একবার ঊর্ধ্বমুখী, তারপর নিম্নমুখী, তারপর আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। আগের মতোই, ১ ঘণ্টার টাইমফ্রেমে কোনো স্পষ্ট প্রবণতা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। প্রতি ঘণ্টা বা দুই ঘণ্টা পরপর বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত নতুন খবর প্রকাশিত হচ্ছে, মার্কেটের ট্রেডারদের মনোভাবও ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং এই পেয়ারের মূল্যকে বারবার একদিকে ঠেলে দিচ্ছে। বর্তমানে পাউন্ডের দর বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যেই এটির মূল্য আবার কমে যেতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত তিন মাসের জন্য শুল্কছাড় বাস্তবিকভাবে পরিস্থিতির খুব বেশি পরিবর্তন ঘটাচ্ছে না। হ্যাঁ, এই তিন মাস আলোচনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে যাতে অনেক দেশের সঙ্গে পূর্ণমাত্রার বাণিজ্য সংঘাত এড়ানো যায়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদাররা হলো মেক্সিকো, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এখন পর্যন্ত কানাডা, ইইউ বা চীনের সঙ্গে কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ চুক্তির বাস্তব সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এবং যেকোনো পরিস্থিতিতেই "শুল্ক" বহাল আছে—এখন কেবলমাত্র সেই হার 10%। অতএব, গতকাল নতুন করে মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধি শুরু হওয়ার জন্য কোনো শক্তিশালী কারণ সৃষ্টি হয়নি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার একাধিক সিগন্যাল গঠিত হয়। তবে আগেই বলা হয়েছে, মার্কেটের ট্রেডারদের মনোভাব বারবার পাল্টে গেছে এবং মূল্যও ঘন ঘন দিক পরিবর্তন করেছে। 1.2848–1.2860 এরিয়ার প্রথম দুটি সেল সিগন্যাল কাজে লাগিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ট্রেড করা যেত। এরপর 1.2791–1.2798 জোন থেকেও একটি কার্যকর সিগন্যাল আসে। তারপর মার্কিন সেশন শুরু হয়, ট্রাম্প জেগে ওঠেন, এবং আবার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি শুরু হয়।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
১ ঘণ্টার টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অনেক আগেই শুরু হওয়া উচিত ছিল, তবে ট্রাম্প এখনো ডলারের দরপতন ঘটাতে সম্ভাব্য সবকিছু করছেন। বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনার পর আমরা এখন আর দীর্ঘমেয়াদি এই পেয়ারের মূল্যের পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করছি না। গত শুক্রবার এই পেয়ারের যে তীব্র দরপতন দেখা গেছে, তা হয়তো একটি গভীর কারেকশনের সূচনা। তবুও, মার্কেট এখনও ট্রাম্প এবং তার সিদ্ধান্তের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে: ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে—ডলারের দরপতন ঘটেছে; আবার ট্রাম্প শুল্কে ছাড় দিলে—ডলারের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পায়।
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতা অব্যাহত থাকতে পারে। আজ পাউন্ড এবং ডলারের মূল্যের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব। বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা স্বাভাবিকভাবেই চলছে এবং আজ প্রকাশিতব্য যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে প্রভাব ফেলতে পারে।
৫ মিনিটের চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য বর্তমানে বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.2502–1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680–1.2685, 1.2723, 1.2791–1.2798, 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3145–1.3167, 1.3225, 1.3272।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, তবে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যদিও এটি এখন আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবে একে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করাও ঠিক হবে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।