বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই দুই ধরনের মুভমেন্টেরই প্রধান কারণ হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত পদক্ষেপ। প্রথমে খবর আসে যে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করছে, যার ফলে মোট শুল্কহার 104%-এ পৌঁছায়—যা একটি অভাবনীয় মাত্রা। এরপর ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নেন সেটি আরও বাড়িয়ে 125% করবেন (সম্ভবত অর্ধেক পথে না থেমে পুরো পথচলার মানসিকতায়), তবে অন্যান্য দেশের জন্য ৯০ দিনের শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা দেন—এই সময়সীমার মধ্যে সকল আমদানির ওপর 10% হারে শুল্ক আরোপ হবে।
প্রথম ঘোষণাটি বাণিজ্যযুদ্ধে উত্তেজনা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়, আর দ্বিতীয়টি কিছুটা স্বস্তি এনে দেয় এবং আলোচনার সম্ভাবনা ও নমনীয় অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশাকে উসকে দেয়। তবে ট্রাম্পের এই "ডিসকাউন্ট"-এর কারণে ডলারের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধির সম্ভাবনা খুবই কম, কারণ এখনও শুল্ক বহাল রয়েছে এবং ট্রাম্প তার নিজের মতো করে পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন। বাইরে থেকে এটি দেখতে বেশ অদ্ভুত লাগছে—প্রথমে শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে, এরপর সেই শুল্কই আবার ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
রাতের বেলা ট্রাম্পের পদক্ষেপের কারণে সৃষ্ট তীব্র মুভমেন্ট বাদ দিয়েও বুধবার ৫ মিনিটের চার্টে তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। মূল্য 1.1011 এবং 1.1091 লেভেল থেকে তিনবার বাউন্স করে, এবং প্রতিবারই মূল্য নিকটবর্তী টার্গেট লেভেলে পৌঁছায়। দিনের বেলা এই পেয়ারের মূল্যের তীব্র অস্থিরতার কারণে, নতুন ট্রেডাররাও এই তিনটি ট্রেড থেকে প্রায় 150 পিপস লাভ করতে পারতেন।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
১ ঘণ্টার টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো বজায় আছে। এটি কতদিন চলবে, তা নিশ্চিত নয়, কারণ কেউ জানে না ট্রাম্প আর কত শুল্ক আরোপ করতে পারেন। বাণিজ্যযুদ্ধে একাধিকবার উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ অনেক দেশই এখন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যেই বলেছেন, যেকোনো ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে যুক্তরাষ্ট্র আবারও নতুন করে শুল্ক আরোপ করবে। ট্রাম্প শুল্কে "ডিসকাউন্ট" দেয়ার ঘোষণার দেয়ায় ডলারের দর কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে, তবে তা সীমিত মাত্রায় হবে—কারণ মৌলিক প্রেক্ষাপটের তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি।
বৃহস্পতিবার মার্কেটে সম্ভবত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থাকবে। আমরা এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট সম্পর্কে কোনো পূর্বাভাস দেব না, কারণ এখন প্রায় প্রতি দুই ঘণ্টায়ই নতুন কোনো বাণিজ্য-সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হচ্ছে। বিশ্ববাজারে যা ঘটছে তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।
৫ মিনিটের চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রকাশিত হবে, তবে এটি বর্তমানে মার্কেট ট্রেডারদের কাছে খুব একটা গুরুত্ব বহন করছে না। বাণিজ্যযুদ্ধ সম্পর্কিত সংবাদই শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।