মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার খুবই স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার সাথে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে এবং সারাদিন জুড়ে এটি মূলত সাইডওয়েজ ট্রেড করেছে। তবে, আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম—এটি ছিল কেবল ঝড়ের আগে সাময়িক প্রশান্তি। ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্র—কোনো দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ইভেন্ট ছিল না, কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় আবারও 50% শুল্ক বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন চীন থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যই "ট্রাম্পের শুল্কের"-এর আওতায় পড়বে, যার হার মোট 104%। এই উন্মত্ততা অব্যাহত রয়েছে এবং আবারও মার্কিন ডলার দরপতনের ধারা শুরু হয়েছে। 1-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে গেছে, মূল্যের কারেকশন হয়েছে এবং এখন ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। আমরা আগেই উল্লেখ করেছিলাম, নতুন করে ট্রাম্পের যেকোনো ধরনের শুল্ক আরোপের একমাত্র সম্ভাব্য ফলাফল হচ্ছে—ডলার এবং মার্কিন স্টক মার্কেটের আরও দরপতন।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5 মিনিট টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে, তবে সারাদিন মার্কেটে এলোমেলো ও রেঞ্জ-ভিত্তিক মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। 1.0940–1.0952 এরিয়ার আশেপাশে তিনটি সিগন্যাল গঠিত হয়, যার মধ্যে দুটি ভুল সিগন্যাল ছিল। তবে 1.0888–1.0896 এরিয়ার সিগন্যাল থেকে বেশ ভালোই মুনাফা করা সম্ভব হয়েছে এবং এটি দীর্ঘ সময় ধরে লং পজিশন হোল্ড করে রাখার সুযোগ দিয়েছে। সন্ধ্যায় চীনের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসে, তাই আরেক দফা ডলার বিক্রির প্রত্যাশা ও প্রস্তুতি যৌক্তিক ছিল। এই ট্রেড থেকে এখন পর্যন্ত 155 পিপস লাভ হয়েছে।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
1-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। এটি কতদিন চলবে তা কেউ জানে না, কারণ ট্রাম্প আর কত নতুন শুল্ক আরোপ করবেন, সেটি অনিশ্চিত। বাণিজ্যযুদ্ধ আরও এক ধাপ তীব্র হতে পারে—বিশেষ করে যখন অনেক দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানানোর পরিকল্পনা করছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, যেকোনো পাল্টা পদক্ষেপ নতুন করে শুল্ক আরোপের কারণ হবে।
বুধবার মার্কেটে সম্ভবত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করবে। আমরা আজ মার্কেটের মুভমেন্ট নিয়ে কোনো পূর্বাভাস দিচ্ছি না। বর্তমানে বৈশ্বিক মার্কেটের যা অবস্থা, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।
বুধবার, 5 মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1048, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292।
বুধবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্র—কোথাও কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না—তবে বর্তমানে এগুলোর আর তেমন কোনো গুরুত্বও নেই। এমনকি সন্ধ্যায় প্রকাশিতব্য ফেডের মিনিট বা কার্যবিবরণীও এখন প্রাসঙ্গিক বলে মনে হচ্ছে না। এখনও সবকিছুই ট্রাম্প এবং তার বাণিজ্য নীতিকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।