সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের তীব্র ওঠানামা দেখা গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিকে বহুভাবে ব্যাখ্যা করা যায়—আতঙ্ক, বিশৃঙ্খলা, উন্মত্ততা, কিংবা প্রলয়। কিন্তু মূল সমস্যা একটাই: এখানে কোনো যৌক্তিক বা টেকনিক্যাল মুভমেন্ট নেই। একের পর এক সংবাদ আসছে, মার্কেটের ট্রেডারদের মনোভাব বারবার পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং সেই অনুযায়ী এই পেয়ারের মূল্যের দিকনির্দেশনাও ঘন ঘন পাল্টে যাচ্ছে। এমনকি মূল্যের একদিন পরের মুভমেন্ট সম্পর্কেও এখন পূর্বাভাস দেয়া প্রায় অসম্ভব।
এমনকি গতকাল ট্রেডিং সেশনের মধ্যেই এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যে ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য সব ধরনের শুল্ক স্থগিত করতে পারেন। এক ঘণ্টা পরেই হোয়াইট হাউস জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ ধরনের কিছু বলেননি। আর কয়েক ঘণ্টা পর নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যদি চীন পাল্টা পদক্ষেপ নিতে চায়, তাহলে ট্রাম্প আবারও নতুন করে শুল্ক আরোপ করবেন—এই শর্তে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেসব শুল্ক আরোপ করেছে সেগুলোকে তারা "ন্যায়সংগত" বলে মনে করে। স্বাভাবিকভাবেই, একদিনে পাঁচবার দিক বদলানো এখন মার্কেটের স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে! আমরা বর্তমানে একটি বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি। বড় বড় দেশ এবং জোটগুলো এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেই আমরা আগে সতর্ক করেছিলাম—আর সে কারণেই মার্কেটে দীর্ঘ সময় ধরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার 5 মিনিট টাইমফ্রেমে একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। 1.1048 লেভেল থেকে ট্রেড শুরু করা যেত, তবে আবারও মনে করিয়ে দিতে চাই যে—বর্তমানে মার্কেটে খুবই তীব্র এবং এলোমেলো মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে। এক ঘণ্টার মধ্যেই মূল্য একাধিক লেভেল ব্রেক করে দিক পরিবর্তন করছে। যারা নতুন ট্রেডার, তাদের জন্য এই সময় ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
1 ঘণ্টার টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। এই প্রবণতা কতদিন অব্যাহত থাকবে তা নিশ্চিত নয়, কারণ কেউ জানে না যে ট্রাম্প আর কত শুল্ক আরোপ করতে পারেন। বাণিজ্যযুদ্ধে একাধিকবার অতিরিক্ত উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ অনেক দেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, কোনো পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে নতুন করে শুল্ক আরোপ করা হবে।
মঙ্গলবার মার্কেটে সম্ভবত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করবে। আমরা কোনো পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করব না, কারণ বৈশ্বিক পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে সেটাকে ব্যাখ্যা করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার 5 মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1048, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292।
মঙ্গলবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না—তবে বর্তমানে এই ধরনের প্রতিবেদনগুলো প্রাসঙ্গিক বলেই মনে হচ্ছে না। মার্কেটের ট্রেডাররা এখন কেবল বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ সম্পর্কিত যেকোনো সংবাদেই প্রতিক্রিয়া দেখাবে এবং শুধুমাত্র সেটির দিকেই মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।