শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের তীব্র দরপতন পরিলক্ষিত হয়েছে, যার কারণ ব্যাখ্যা করা অত্যন্ত কঠিন। হ্যাঁ, ব্রিটিশ পাউন্ড বর্তমানে অতিরিক্ত ক্রয় করা হয়েছে এবং অযৌক্তিকভাবে দামী হয়ে উঠেছে। বিগত কয়েক মাসে পাউন্ডের দর বৃদ্ধির একমাত্র কারণ হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কেটের ট্রেডাররা অন্যান্য সব খবর, ইভেন্ট ও প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ্যেই উপেক্ষা করেছে। তাহলে শুক্রবার মার্কিন ডলারের দর কেন ৩০০ পিপস পর্যন্ত বাড়ল? নন-ফার্ম পেরোলস প্রতিবেদনের ফলাফল ইতিবাচক হলেও, বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে নেতিবাচক ছিল। জেরোম পাওয়েল হকিশ বা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তিনি সন্ধ্যায় বক্তব্য দিয়েছিলেন—যখন ডলারের দর সকালের দিকে বাড়তে শুরু করেছিল। সব মিলিয়ে, মার্কেটে এখনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিট টাইমফ্রেমে শুক্রবার বেশ অনেকগুলো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। এর বেশিরভাগই ট্রেডযোগ্য ছিল—পাউন্ডের মূল্য তুলনামূলকভাবে ইউরোর চেয়ে বেশি টেকনিক্যালভাবে মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে। তবে মুভমেন্টগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। ইউরোপীয় সেশনের শুরুতেই 1.3102–1.3107 এরিয়া থেকে বাউন্স করার পর পাউন্ড বিক্রি করা যেত। পরে 1.2980–1.2993 জোনে এই পেয়ারের দরপতন ঘটে এবং সেখান থেকে একটি বাই সিগন্যাল তৈরি হয়। 1.3043 লেভেল থেকে আবারও 1.2860 পর্যন্ত এই পেয়ার বিক্রি করা সম্ভব ছিল।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে অনেক আগেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু ট্রাম্প বারবার ডলারের দরপতন ঘটানোর জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করছেন। বিশ্বব্যাপী আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা দীর্ঘমেয়াদে এই কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট সম্পর্কে অনুমান করতেই পারছি না। শুক্রবার আমরা একটি বড় রকমের দরপতন দেখেছি, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ কারেকশনের সূচনা হতে পারে। তবে মার্কেটের ট্রেডাররা এখন পুরোপুরি ট্রাম্প এবং তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। যদি বাণিজ্য যুদ্ধ আরও বিস্তার লাভ করে, তবে আমরা আবারও মার্কিন ডলারের দরপতন দেখতে পেতে পারি।
সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার বজায় থাকতে পারে। আজ পাউন্ড বা ডলারের মূল্যের মুভমেন্টের পূর্বাভাস দেওয়া কার্যত অসম্ভব। খুবই অস্বাভাবিক এবং বিশৃঙ্খল মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে। একমাত্র বাস্তবসম্মত কৌশল হলো—৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে নির্ধারিত লেভেলগুলো অনুসরণ করে ট্রেড করা।
৫ মিনিট চার্টে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.2502–1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680–1.2685, 1.2723, 1.2791–1.2798, 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3145–1.3167, 1.3225, 1.3272।
সোমবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে না বা কোন প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে না। তবে আজও এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকতে পারে এবং অনিশ্চিত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।